মোঃ নাজমুল সাঈদ সোহেল, চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভায় ডাকাতি করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটপাটসহ হামলার ঘটনা ঘটে। ডাকাতিকালে চকরিয়া চিংড়ি জোনের ত্রাস এক ডজনের অধিক মামলার চিহ্নিত শীর্ষ ডাকাত চিরিংগা ইউনিয়নের ৫নং ওয়াস্থ সওদাগরঘোনার নুরুল কবিরের পুত্র আব্দুর রহিম (প্রকাশ রহিম্মা ডাকাত)একটি ত্রি-নথ -ত্রি রাইফেল বন্দুকসহ পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডস্থ নিজপানখালী এলাকায় শুক্রবার রাত ১০:৪৫ মিনিটের সময় মৃত অলী মিয়ার বাড়িতে ডাকাতিকালে স্থানীয় জনতা গণপিটুনী দিয়ে পুলিশের কাছে সোপার্দ করেন।এসময় তার সাথে থাকা মৌঃ হোসাইন আহমদের পুত্র ইউসুফ প্রকাশ(বর্মাইয়া ইউসুফ,পৌরসভা ৫নং ওয়ার্ডের আব্দুল গণির পুত্র ছৈয়দ হোসাইনসহ অন্যান্য ডাকাতরা গুলি ছুড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।এতে ডাকাতদের প্রহারে আহত হন জামাল হোসাইনসহ তাহার পুত্র মোঃ শাওন ও সাগর।
ডাকাত রহিমের বিরুদ্ধে রয়েছে পুলিশ এ্যাসল্ট মামলা, অস্ত্র মামলা, ডাকাতি প্রস্তুতি,যৌতুক নিরোধ আইনের মামলাসহ অসংখ্য মামলার আসামী।যাহা রহিমের মামলা নং যথাক্রমে-(১) জি,আর-২২/১৫, (২) জি,আর-২২৩/১৫ (৩) জি,আর-২৩১/১২ইং (৪) জি,আর -২৩০/১২ইং (৫) জি,আর- ২৩২/১২ (৬)সি,আর-১১২/১২ (৭)জি,আর-১৩৫/১১ (৮)জি,আর-৩২১/১১সহ অজ্ঞাত সর্বমোট ডজনখানেক মামলা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,পৌরসভার নিজপানখালী এলাকার মৃত আব্বাস উদ্দিনের মেয়ে জামাই হন ডাকাত রহিম।সে সূত্রে রহিম শাশুরবাড়ীকে নিরাপদ মাদকের স্বর্গরাজ্যসহ জুয়ার আসর গড়ে তুলে।তার অনৈতিক কর্মকান্ডে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হলেও প্রতিবাদ করার সাহস পায় না ভয়ে।আব্বাস উদ্দিনের বসতভিটার পাশেই অলী মিয়ার বাড়ি, তার ছেলে জামাল হোসাইন ডাকাত রহিমের অপকর্মের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে আপত্তি ও প্রতিবাদ করেন বেশ কয়েকবার।এতে ডাকাত রহিম ক্ষীপ্ত হয়ে তার সালা রাসেল ও মুন্নাসহ স্বদলবলে শুক্রবার রাতে পূর্বপরিকল্পিত ডাকাতি, লুটপাট ও হামলা চালায় অলী মিয়ার পরিবারে। তাদের আর্তনাদ ও চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে বন্দুকের গুলি ছুড়ে ডাকাতরা। গুলির শব্দ ও ডাকাতির খবর পেয়ে এলাকাবাসী রাস্তুায় নেমে চর্তুপাশ ঘিরে ফেলে।এসময় ডাকাতরা এলাকাবাসীর সমাগম বুঝতে পেরে পালানোর চেষ্টাকালে বন্দুকসহ ডাকাত রহিম জনগণের জালে ধরা পড়ে গণধোলাইর শিকার হন। বিষয়টি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ওসিকে অবহিত করলে তাৎক্ষণিক এস আই মহসিন তালুকদার ও এএস আই কামাল হোসাইনসহ সংঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে স্থানীয় জনসাধারণ ডাকাত রহিমকে বন্দুকসহ সোপার্দ করেন।
এবিষয়ে এস আই মহসিন তালুকদার বলেন,ওসি স্যারের নির্দেশে আমার সংঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর জনরোশানলের শিকার হওয়া অবৈধ বন্দুকসহ ডাকাত রহিমকে আটক করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রসংঙ্গত : রহিম বাহিনীর প্রধান রহিম চিংড়িঘের ডাকাতি থেকে শুরু করে চাঁদাবাজি, খুন,ঘুম,গরু-ছাগল লুটপাঠ ও এলাকার উঠতি যুবতীদের সম্ভ্রমহানীসহ এমন কোন অপকর্ম নেই যার কোন অন্ত নেই।প্রকাশ্য দিবালোকে অবৈধ অস্ত্র কাঁদে নিয়ে ঘুরার কারণে সহজে ভয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পায় না কেউ।বলতে গেলে এলাকাবাসী অনেকটা রহিম বাহিনীির কাছে জিম্মি।এমন অনেক পরিবার আছে তাদের ভয়ে অনেক মেয়েদের অভিভাবক স্কুল-মাদ্রায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।
রহিম বাহিনীর শক্তি, মদদ ও আর্শীবাদপুষ্ট সম্পর্কে জানতে চাইলে এক চিংড়িঘের মালিক এ প্রতিবেদককে জানান, উপজেলার চিরিংগা ইউনিয়ন মূলত চরণদ্বীপ ও সওদাগরঘোনার চিংড়িঘের নিয়ে উপকূলীয় জোন হিসেবে বিস্তৃতি।স্থানীয় ইউনিয়নের নেতৃত্বাধীন গুটিকয়েক ও কথিত চিংড়িঘের মালিকরাই তাদের লালন পালন করে থাকেন, যাহাদের রয়েছে রাজনৈতিক নেতার সক্ষতা ও প্রসাসনিক সু-সম্পর্ক। ইতিপূর্বে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা চিরিংগা ইউনিয়নের চিংড়িজোনকে ক্রাইমজোন আখ্যায়িত করে বেশ কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করেছেন।অভিযানে চুনোপুঁটি ধরা পড়লে ও আসল বোয়াল পার পেয়ে যায়।যার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে মদদপুষ্টদের প্রশাসনিকভাবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সক্ষতা থাকার কারণে প্রকৃত অপরাধীরা অভিযানের আগাম বার্তা পেয়ে যায়।যারফলে অপরাধীরা দিনের পর দিন স্বর্গীয়ভাবে অপরাধ প্রবণতা অব্যাহত রেখেছেন।
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি মোঃ হাবিবুর রহমান মুঠোফোন রিসিভ না করায় তাহার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
ডাকাত রহিম আটকের বিষয়ে চকরিয়ার দ্বায়িত্বরত এএসপি মতিউল ইসলাম বলেন,ডাকাত রহিম পুলিশের তালিকাভুক্ত একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী।ইতিপূর্বে তাকে একাধিকবার গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। জামিনে বেরিয়ে এসে পুনরায় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় মাদক ব্যাবসা, চিংড়িঘের দখল, ডাকাতি,গরু-ছাগল লুটপাটসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন।সন্ত্রাসী সে যেই হোক না কেন কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।রহিমকে দেশীয় তৈরি অবৈধ বন্দুকসহ আটক দেখিয়ে নিয়মিত মামলা রুজু করে আদালতে প্রেরণ করা হবে বলে জানান।
পাঠকের মতামত: